দিনটির গুরুত্ব ও ইতিহাস
২০১৫ সালে ডঃ বি.আর. আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভারত সরকার ২৬ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'সংবিধান দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে। সংবিধানের প্রধান স্থপতি ডঃ আম্বেদকর এবং গণপরিষদের সদস্যদের দূরদর্শিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই দিনটি পালন করা হয়। এই দিনটি শুধুমাত্র একটি আইনি নথির উদযাপন নয়, বরং ভারতের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য এবং সৌভ্রাতৃত্বের মশাল হিসেবেও বিবেচিত হয়।
সরকারি উদযাপন
এই বছর সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদের সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সংবিধানের প্রস্তাবনা (Preamble) পাঠ করা হয় এবং দেশবাসীকে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানানো হয়। স্কুল, কলেজ এবং সরকারি দপ্তরগুলোতেও সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ এবং মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়।
রাজনৈতিক বিতর্ক
তবে এবারের সংবিধান দিবস রাজনৈতিক বিতর্কেও সরগরম ছিল। বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে কংগ্রেস এবং তাদের জোট সঙ্গীরা অভিযোগ করেছে যে বর্তমান বিজেপি সরকার সংবিধানের মূল নীতিগুলিকে ক্ষুণ্ণ করছে। বিরোধীরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির (ED, CBI) অপব্যবহার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং বিরোধী কণ্ঠস্বর দমনের অভিযোগ তুলে দিনটিকে 'সংবিধান বাঁচাও দিবস' (Save Constitution Day) হিসেবে পালন করেছে।
অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। সরকারের দাবি, তারা সংবিধান মেনেই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, বিরোধীরা নেতিবাচক রাজনীতি করছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
রাজনৈতিক বাদানুবাদ সত্ত্বেও, সংবিধান দিবস প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে নিজস্ব অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার দিন। গণতন্ত্রের অস্তিত্ব যে সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিকদের ওপর নির্ভর করে—এই বার্তাটিই আজকের দিনের মূল প্রতিপাদ্য।