" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory "আমার সোনার বাংলা" নিয়ে আসামে বিতর্ক: কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

"আমার সোনার বাংলা" নিয়ে আসামে বিতর্ক: কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা



সম্প্রতি আসামের করিমগঞ্জ জেলায় কংগ্রেসের এক দলীয় সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "আমার সোনার বাংলা" গানটির কয়েকটি চরণ গাওয়ায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেস নেতা বিধু ভূষণ দাসের গাওয়া এই গানটিকে কেন্দ্র করে আসামের বিজেপি নেতারা এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ঘটনা ও প্রতিক্রিয়া:

বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, বিধু ভূষণ দাস ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের পরিবর্তে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন, যা একটি "রাষ্ট্রবিরোধী" কাজ। আসামের মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় জড়িত কংগ্রেস নেতা ও অন্যান্য কর্মীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি শিবির থেকে আরও অভিযোগ করা হয় যে, এই ধরনের কাজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানোর "বৃহত্তর বাংলাদেশ" আখ্যানকে সমর্থন করে।

কংগ্রেস ও বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের অবস্থান:

বিপরীতে, কংগ্রেস এবং বহু বাঙালি বুদ্ধিজীবী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁদের মতে, "আমার সোনার বাংলা" গানটি একটি cherished রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা করেছিলেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই গান গাওয়া কোনোভাবেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা হতে পারে না, বরং এটি বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।

রাজনৈতিক ও আইনি বিতর্ক:

এই ঘটনাটি একটি বড় রাজনৈতিক ও আইনি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আসাম সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া ভারতের সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মানজনক এবং এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারার (রাষ্ট্রদ্রোহিতা) অধীনে পড়ে।

অন্যদিকে, কংগ্রেস এবং আইন বিশেষজ্ঞরা এই যুক্তি খণ্ডন করেছেন। তাঁদের মতে, একটি সাংস্কৃতিক গান গাওয়া, বিশেষত যার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে, তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলা যায় না। রাষ্ট্রদ্রোহিতার জন্য সহিংসতায় উস্কানি বা জনসাধারণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে উপাদান থাকা প্রয়োজন, এক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এই পদক্ষেপকে "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলেও অভিহিত করা হয়েছে।

ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ:

তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছে, এটি বাঙালি আবেগ এবং রবীন্দ্রনাথের ভাবমূর্তির ওপর অপমান। আসাম সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বাঙালি সম্প্রদায় এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির মধ্যে তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী দলগুলি, বিশেষত সিপিআই(এম), এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন রাজ্যব্যাপী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বিজেপির এই পদক্ষেপকে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ এবং সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছে। প্রতিবাদকারীরা রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে এবং বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সমাবেশ করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সামগ্রিকভাবে, এই বিতর্কটি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে ভাষা, সংস্কৃতি এবং জাতীয় পরিচয় নিয়ে বারবার ফিরে আসা বিতর্কের এক নতুন উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies