লন্ডন, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫: হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক দেব আনন্দের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ পালিত হচ্ছে। কোটি ভক্তের হৃদয়ে তিনি আজও ‘এভারগ্রিন স্টার’ বা চিরসবুজ তারকা হিসেবে বেঁচে আছেন। ২০১১ সালের আজকের দিনেই (৩ ডিসেম্বর) লন্ডনের ওয়াশিংটন মেফেয়ার হোটেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
১৯২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণকারী ধর্মদেব পিশোরিমাল আনন্দ, যিনি বিশ্বজুড়ে দেব আনন্দ নামেই পরিচিত, ছিলেন একাধারে স্টাইল আইকন ও বলিষ্ঠ অভিনেতা। ছয় দশকেরও বেশি দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ১০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৫১ সালে ‘বাজি’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। পরবর্তীতে রোমান্টিক হিরো থেকে শুরু করে থ্রিলার জনরা— সবর্ত্রই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ।
আর. কে. নারায়ণের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত কালজয়ী সিনেমা ‘গাইড’ (১৯৬৫)-এ রাজু গাইডের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ক্যারিয়ারের শীর্ষে পৌঁছান। এই ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতার পুরস্কারও জিতে নেন। এছাড়া ‘জুয়েল থিফ’ (১৯৬৭), ‘জনি মেরা নাম’ (১৯৭০) এবং ‘হরে রামা হরে কৃষ্ণ’ (১৯৭১)-এর মতো ব্লকবাস্টার ছবিতে তাঁর চার্মিং উপস্থিতি, দ্রুত সংলাপ বলার ভঙ্গি এবং ঝুঁকে হাঁটার স্টাইল আজও দর্শকের মনে অমলিন হয়ে আছে।
কেবল অভিনয়েই নয়, চলচ্চিত্র নির্মাণেও তিনি ছিলেন পথিকৃৎ। ১৯৪৯ সালে তিনি নিজের প্রযোজনা সংস্থা ‘নবকেতন ফিল্মস’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর ব্যানারে ৩৫টিরও বেশি ছবি তৈরি করেন। জিনাত আমানের মতো তারকাদের বলিউডে প্রতিষ্ঠা করার পেছনেও তাঁর বড় অবদান ছিল।
ভারতীয় চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০০১ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০২ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হন। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অগণিত ভক্ত ও চলচ্চিত্র প্রেমীরা এই মহান শিল্পীকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন।