রক্তাক্ত শিক্ষাঙ্গন: ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝরলো দুই তাজা প্রাণ, আতঙ্কে স্তব্ধ প্রভিডেন্স

 

প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ড: পরীক্ষার প্রস্তুতির ব্যস্ত সন্ধ্যা মুহূর্তেই পরিণত হলো বিভীষিকায়। জ্ঞানের আলো জ্বলার কথা যেখানে, সেখানে আজ রক্তের দাগ। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত ক্যাম্পাস শনিবার সন্ধ্যায় কেঁপে উঠল গুলির শব্দে। এই নির্মম হামলায় অকালে ঝরে গেছে দুটি তাজা প্রাণ, আর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আরও অন্তত আটজন শিক্ষার্থী।

ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন শিক্ষার্থীরা আসন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে মগ্ন ছিল। লাইব্রেরি থেকে হলরুম—সবখানেই ছিল পড়াশোনার ধীর লয়। কিন্তু আচমকাই সেই নীরবতা ভেঙে খানখান হয়ে যায় আর্তনাদ আর সাইরেনের শব্দে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী কালো পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি, যে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাকে ধরতে এফবিআই ও সোয়াট (SWAT) টিম হন্যে হয়ে খুঁজছে পুরো শহরজুড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় জারি করা হয়েছে জরুরি সতর্কতা। শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে অবস্থান করতে (শেল্টার ইন প্লেস)। যে ক্যাম্পাসে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস থাকার কথা, সেখানে এখন শুধুই পিনপতন নীরবতা আর চাপা কান্না।

আহত আটজনকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রথমে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলা হলেও, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তারা বর্তমানে স্থিতিশীল। তবুও, তাদের এবং তাদের পরিবারের ওপর দিয়ে যে মানসিক ঝড় বয়ে যাচ্ছে, তা বর্ণনাতীত।

এই ঘটনার খবর পেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে তিনি বলেন, "এটি একটি লজ্জাজনক ঘটনা। আমাদের এখন হতাহতদের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।"

প্রভিডেন্সের আকাশে এখন শুধুই হেলিকপ্টারের টহল আর নিচে পুলিশের সাইরেন। কিন্তু যারা তাদের সহপাঠী বা সন্তান হারালেন, তাদের হাহাকার কি এই সাইরেনের শব্দে চাপা পড়বে? হামলাকারী ধরা না পড়া পর্যন্ত আতঙ্ক কাটছে না ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চোখ থেকে। একটি সুন্দর শনিবারের সন্ধ্যা এভাবে মৃত্যুপুরীতে রূপ নেবে, তা কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি।