বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে, বিএনপি ও বাম দলগুলোর তাড়াতাড়ি নির্বাচনের আহ্বান সত্ত্বেও: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ঢাকা, ৬ জুন ২০২৫: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে, জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে এই ঘোষণা এসেছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ইউনূস, যিনি গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, জোর দিয়ে বলেছেন যে নির্বাচনের আগে চলমান সংস্কারগুলো সঠিক ক্রমে সম্পন্ন করাই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার।
তবে, বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এবং বামপন্থী দলগুলো ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তারা যুক্তি দিয়েছে যে ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করলে পাবলিক পরীক্ষা, রমজানের মতো ধর্মীয় উৎসব এবং বর্ষাকালের কারণে লজিস্টিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। বিএনপি ইউনূসের ঘোষিত সময়সীমার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং এটিকে গণতান্ত্রিক রূপান্তর বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবে সন্দেহ করছে।
ইউনূস চাপের মুখে থাকলেও জানিয়েছেন যে নির্বাচনের সময়সীমা সংস্কারের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে। নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে। এটি হবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ এটি ইউনূসের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন।
ইউনূস কেন এপ্রিল ২০২৬ নির্বাচিত করলেন?
ড. ইউনূস এপ্রিল ২০২৬ নির্বাচনের সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন, কারণ তিনি গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর সংস্কার বাস্তবায়ন এবং রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল করার জন্য সময় প্রয়োজন বলে মনে করেন। তিনি এবং তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জোর দিয়ে বলছেন যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার মতো সংস্কারগুলো অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।
বিএনপি-সহ সমালোচকরা এই দীর্ঘ সময়সীমাকে বিরোধীদের গতি রোধ করার এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তর বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন। তারা উল্লেখ করেছেন যে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে পাবলিক পরীক্ষা, রমজান, বর্ষাকাল এবং প্রধান উৎসবের কারণে নির্বাচনের লজিস্টিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবুও, ইউনূসের প্রশাসন জাতীয় স্বার্থ এবং স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেছে যে প্রয়োজনীয় ভিত্তি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।