" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory ট্রাম্প প্রশাসনের ছাঁটাই ও বাজেট কমানোর প্রতিবাদে ২০শে জুলাই ‘মুন ডে’তে নাসার কর্মীদের ঐতিহাসিক বিক্ষোভ: মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ কি সত্যিই হুমকির মুখে? NASA Workers to Protest Mass Layoffs, Budget Cuts on 'Moon Day' //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

ট্রাম্প প্রশাসনের ছাঁটাই ও বাজেট কমানোর প্রতিবাদে ২০শে জুলাই ‘মুন ডে’তে নাসার কর্মীদের ঐতিহাসিক বিক্ষোভ: মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ কি সত্যিই হুমকির মুখে? NASA Workers to Protest Mass Layoffs, Budget Cuts on 'Moon Day'

 


ওয়াশিংটন ডি.সি., ১৯শে জুলাই ২০২৫: আগামীকাল, ২০শে জুলাই, মানবজাতির চাঁদে প্রথম পদার্পণের ঐতিহাসিক ৫৬তম বার্ষিকী। এই বিশেষ দিনটিকে ‘মুন ডে’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। তবে এবার ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে নাসার কর্মীরা এই দিনটিকে কেবল উদযাপন করবেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ জানানোর মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করবেন। ট্রাম্প প্রশাসনের ২০২৬ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে নাসা-তে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই এবং বিজ্ঞান প্রকল্পে অভূতপূর্ব অর্থ কমানোর বিরুদ্ধে তারা সরব হতে চলেছেন। এই পদক্ষেপগুলিকে নাসার কর্মীরা এবং এর সমর্থকরা মার্কিন মহাকাশ গবেষণা ও বিজ্ঞানের ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখছেন।

আঁচল ধরেছে আশঙ্কা, "দুঃস্বপ্নের মতো এই বছরটি থামেনি"

নাসার বর্তমান পরিস্থিতিকে সংস্থার কর্মীরা 'দুঃস্বপ্ন' বলে বর্ণনা করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী জানিয়েছেন, ছাঁটাইয়ের খাঁড়া এবং বিভিন্ন মিশন বাতিলের আশঙ্কায় তাদের মানসিক ও পেশাদার জীবনে চরম চাপ সৃষ্টি হয়েছে। 'নাসা নিডস হেল্প' নামক একটি তৃণমূল স্তরের কর্মী গোষ্ঠী এবং 'গডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স, সায়েন্টিস্টস অ্যান্ড টেকনিশিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন (জিইএসটিএ)' এই বিক্ষোভের প্রধান আয়োজক। তাদের অভিযোগ, ২০২৬ সালের বাজেট এখনও আইনে পরিণত না হওয়া সত্ত্বেও, নাসার নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই এই ব্যাপক কাটছাঁটকে অনিবার্য ধরে নিয়ে কর্মী ছাঁটাই এবং চুক্তি বাতিল প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।



বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক ও নাসার চুক্তিভিত্তিক কর্মী মার্শাল ফিঞ্চের কথায়, “তারা দশকের পর দশক ধরে অর্জিত অগ্রগতি নষ্ট করছে... সাধারণ মানুষ হয়তো শুনেছেন যে নাসা আক্রান্ত হচ্ছে, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ জানেন না যে এটি এখনই ঘটছে।” এই প্রতিবাদ কর্মসূচিটি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং কংগ্রেসকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে চাইছে।


প্রস্তাবিত কাটছাঁটের ভয়াবহ চিত্র:


ট্রাম্প প্রশাসনের ২০২৬ সালের বাজেট প্রস্তাব নাসার জন্য এক বিধ্বংসী চিত্র তুলে ধরেছে। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে নাসার সামগ্রিক বাজেট ২৪.৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৮.৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে, যা প্রায় ২৪% হ্রাস। এর চেয়েও উদ্বেগজনক হলো, নাসার বিজ্ঞান গবেষণা খাতের তহবিল ৭.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৩.৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে – অর্থাৎ প্রায় ৪৭% হ্রাস। এই ঐতিহাসিক বাজেট কমানোর ফলে নাসার কর্মী সংখ্যাও ১৭,৩৯১ থেকে ১১,৮৫৩-এ নেমে আসবে, যা প্রায় ৩২% কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দেয়।



যেখানে আঘাত হানবে ছাঁটাইয়ের কোপ:


  • কর্মী ছাঁটাইয়ের তীব্রতা: ২০০০-এরও বেশি প্রবীণ কর্মী, যাদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক, প্রকৌশল এবং মিশন সহায়ক ভূমিকায় থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন, তাদের চাকরি হারানোর মুখে। গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার (৬০০-এর বেশি কর্মচারী হারাচ্ছে), জনসন স্পেস সেন্টার, কেনেডি স্পেস সেন্টার এবং সদর দফতর - এই কেন্দ্রগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই অভিজ্ঞ কর্মীদের চলে যাওয়া নাসার প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান এবং সক্ষমতার উপর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

  • মিশন বাতিলের ঢেউ: এই প্রস্তাবিত বাজেট ৪০টিরও বেশি চলমান ও আসন্ন মহাকাশ মিশনকে বাতিল বা তহবিলবিহীন করে দেবে। এর মধ্যে জুপিটার-এর জুনো (Juno), কুইপার বেল্টের নিউ হরাইজনস (New Horizons), মার্স স্যাম্পল রিটার্ন (Mars Sample Return) এবং চন্দ্রা এক্স-রে অবজারভেটরি (Chandra X-ray Observatory)-এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মিশনও রয়েছে। এমনকি, শুক্র এবং মঙ্গলে ভবিষ্যৎ ফ্ল্যাগশিপ মিশনগুলিও হুমকির মুখে। এই মিশনগুলির বাতিল হয়ে যাওয়া শুধু বৈজ্ঞানিক ক্ষতিই নয়, মহাকাশ গবেষণায় আমেরিকার নেতৃত্বকেও দুর্বল করবে।

ব্যাপক প্রভাব ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

বিজ্ঞান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এই বাজেট কাটছাঁটকে "বিলুপ্তি-স্তরের ঘটনা" (extinction-level event) বলে অভিহিত করা হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, ৪৭% বিজ্ঞান বাজেট হ্রাসের ফলে মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানের दशकों ধরে অর্জিত অগ্রগতি ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দ্রুত ও তীব্র বাজেট হ্রাস নাসার কার্যকারিতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে, চলমান মিশনের উৎপাদনশীলতা ব্যাহত করবে এবং মার্কিন মহাকাশ শিল্পকে দুর্বল করে দেবে।

মার্কিন সেনেটের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটি প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবিত কাটছাঁট প্রত্যাখ্যান করার ইঙ্গিত দিয়েছে, যা কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে চূড়ান্ত তহবিলের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নাসার সায়েন্স মিশন ডিরেক্টরেটের সকল জীবিত প্রাক্তন প্রধানরা কংগ্রেসকে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে এই কাটছাঁটগুলি বাতিল করার এবং দেশের বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যৎ রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সতর্ক করেছেন যে, এই ধরনের পদক্ষেপ মহাকাশ গবেষণা ও বিজ্ঞানে বিশ্ব মঞ্চে আমেরিকার নেতৃত্বকে চীনের মতো অন্যান্য দেশের কাছে তুলে দেবে।



কেন 'মুন ডে'-তেই বিক্ষোভ?


২০শে জুলাই, মুন ডে, মানবজাতির জন্য একটি প্রতীকী দিন, যা চাঁদে প্রথম মানুষের পদার্পণের মাধ্যমে নাসার ঐতিহাসিক সাফল্যকে চিহ্নিত করে। এই দিনটিকে বেছে নেওয়ার মাধ্যমে আয়োজকরা মহাকাশ অনুসন্ধান এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির প্রতি এই গুরুতর হুমকির বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে চান। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নাসা এবং বৃহত্তর বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রতিফলন, যা এই বাজেট প্রস্তাবগুলি কার্যকর হলে মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

পরিশেষে বলা যায়, নাসার কর্মীদের এই 'মুন ডে' বিক্ষোভ সংস্থার ইতিহাসে গভীরতম তহবিল এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে এক দৃঢ় প্রতিবাদ। মিশন, কর্মজীবীদের জীবন এবং মহাকাশে আমেরিকার দশকের পর দশক ধরে বিনিয়োগ যখন ঝুঁকির মুখে, তখন আয়োজকরা জনগণের এবং আইনপ্রণেতাদের জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে অপরিবর্তনীয় ক্ষতির হাত থেকে নাসাকে রক্ষা করা যায়।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies