দেরাদুন, ১৯ জুলাই ২০২৫: গত ৮ মে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)। এই রিপোর্টে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, জরুরি অবতরণের চেষ্টার সময় হেলিকপ্টারের মূল রোটর ব্লেড একটি ওভারহেড ফাইবার অপটিক তারে আঘাত হানার ফলেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, যাতে পাইলট সহ ৬ জনের মৃত্যু হয় এবং একজন গুরুতর আহত হন।
গত ৮ মে, ২০২৫ তারিখে অ্যারোট্রান্স সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের একটি বেল ৪০৭ হেলিকপ্টার (রেজিস্ট্রেশন VT-OXF) উত্তরকাশীর গাংনানির কাছে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় পাইলট সহ ৬ জন নিহত হন এবং একজন যাত্রী গুরুতর আহত হন।
হেলিকপ্টারটি চার ধাম যাত্রার জন্য দেরাদুনের সহস্রধারা হেলিপ্যাড থেকে ৭ জন আরোহী নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল। উড্ডয়নের প্রায় ২০ মিনিট পর, হেলিকপ্টারটি তার নির্ধারিত উচ্চতা থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে নামতে শুরু করে। পাইলট উত্তরকাশী-গঙ্গোত্রী জাতীয় সড়ক (NH 34)-এর গাংনানির কাছে একটি জরুরি অবতরণের চেষ্টা করেন।
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে AAIB জানিয়েছে, জরুরি অবতরণের চেষ্টার সময় হেলিকপ্টারের মূল রোটর ব্লেডটি হাইওয়ের সমান্তরালভাবে থাকা একটি ওভারহেড ফাইবার অপটিক তারে আঘাত করে। এই আঘাতের ফলেই হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনায় নিহত পাইলটের বয়স ছিল প্রায় ৫৯-৬০ বছর এবং তার ৬,১০০ ঘণ্টার বেশি উড়ার অভিজ্ঞতা ছিল। নিহত ৫ যাত্রীর মধ্যে ৪ জন মুম্বাইয়ের এবং ২ জন অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। অন্ধ্রপ্রদেশের একজন যাত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে যান এবং তাকে চিকিৎসার জন্য আকাশপথে স্থানান্তরিত করা হয়।
দুর্ঘটনাস্থলে কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। আরও বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য ধ্বংসাবশেষ সুরক্ষিত করা হয়েছে এবং তদন্তকারীরা বিশদ বিশ্লেষণের জন্য মূল উপাদান সংগ্রহ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB) এবং কানাডার টিএসবি সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি, এবং রোলস-রয়েসের একজন কারিগরি উপদেষ্টা চলমান তদন্তে সহায়তা করছেন।
হেলিকপ্টারটির শেষ নির্ধারিত পরিদর্শন করা হয়েছিল ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে।
সংক্ষেপে, AAIB-এর প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণের চেষ্টার সময় তার রোটর ব্লেড দিয়ে একটি ওভারহেড তারে আঘাত করার কারণেই এই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে, যার ফলে ৬ জনের প্রাণহানি হয়। বিস্তারিত তদন্ত এখনও চলছে।