" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory বিহারের রায়: রেকর্ড ভোটদানে নারী শক্তি ও প্রশান্ত কিশোরের ‘জন সুরাজ’– এই দুই নির্ণায়ক ফ্যাক্টরই কি ফল ঘুরিয়ে দেবে? //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

বিহারের রায়: রেকর্ড ভোটদানে নারী শক্তি ও প্রশান্ত কিশোরের ‘জন সুরাজ’– এই দুই নির্ণায়ক ফ্যাক্টরই কি ফল ঘুরিয়ে দেবে?



বিশেষ প্রতিবেদন, পাটনা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫:

২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৬৬.৯১% রেকর্ড ভোটদানের পর এখন গোটা দেশের নজর নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদবের ভাগ্যের দিকে। ১৯৫১ সালের পর এইবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার ভোট দিয়েছেন। তবে এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ফলাফল কোন দিকে যাবে, তা নির্ভর করছে দুটি প্রধান 'নির্ণায়ক ফ্যাক্টর'-এর উপর: এক, বিপুল সংখ্যক নারী ভোটার এবং দুই, রাজনৈতিক কৌশলী থেকে নেতা হওয়া প্রশান্ত কিশোর (পিকে) ও তাঁর ‘জন সুরাজ’ দল।


১. নীরব শক্তি: নারী ভোটাররাই নির্ণায়ক

এই নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান হল নারী ভোটারদের অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটদানের হার পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল।

  • মহিলা ভোটদান: ৭১.৬%

  • পুরুষ ভোটদান: ৬২.৮%

অর্থাৎ, ভোটদানের হারে পুরুষদের (৬২.৮%) থেকে মহিলারা (৭১.৬%) প্রায় ৯ শতাংশ বেশি। শুধু শতাংশের দিক থেকেই নয়, ভোটের সংখ্যাতেও মহিলারা পুরুষদের সামান্য হলেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন। আনুমানিক ২.৫১ কোটি নারী ভোটারের বিপরীতে প্রায় ২.৪৭ কোটি পুরুষ ভোটার ভোট দিয়েছেন। বিহারের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ নারী ভোটদানের রেকর্ড।

রাজনৈতিক তাৎপর্য:

মহিলা ভোটারদের এই বিশাল অংশটি রাজনৈতিক দলগুলির কাছে একটি 'নীরব ভোটব্যাঙ্ক' হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই ভোটব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করার জন্যই দুই প্রধান জোট ইশতেহারে মহিলাদের জন্য বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়:

  • NDA জোট: মহিলারা ব্যবসা শুরু করলে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য, 'লক্ষপতি দিদি' উদ্যোগ এবং 'জীবিকা কমিউনিটি মবিলাইজার'-দের মাসিক ৩০,০০০ টাকা বেতনে স্থায়ী সরকারি কর্মী মর্যাদা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

  • মহাজোট: 'মাই বাহিন মান যোজনা'-র অধীনে মহিলাদের বছরে এককালীন ৩০,০০০ টাকা (মাসিক ২,৫০০ টাকা) এবং 'জীবিকা দিদি'-দের জন্য স্থায়ী সরকারি চাকরি ও মাসিক ৩০,০০০ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতি দেয়।

বিশ্লেষকদের মতে, যেই জোট মহিলাদের এই বিপুল আস্থা অর্জন করতে পেরেছে, তারাই সরকার গঠনের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে।


২. ভোট বিভাজনের কারিগর: প্রশান্ত কিশোর ফ্যাক্টর

বিহারের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম প্রশান্ত কিশোর (পিকে) এবং তাঁর নতুন সংগঠন ‘জন সুরাজ’। এইবারের নির্বাচনে পিকে-কে ‘অনিচ্ছাকৃত সহায়ক’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পিকে-র কৌশল ও প্রভাব:

পিকে তাঁর প্রচারণায় জাতি, ধর্ম বা বংশবাদের পরিবর্তে সুশাসন, জবাবদিহিতা এবং মৌলিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মূলত এমন ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে NDA এবং মহাজোটের দ্বিমেরু রাজনীতিতে হতাশ এবং প্রকৃত অর্থে পরিবর্তন চান। এই ভোটারদের মধ্যে তরুণ এবং শহুরে ভোটারদের সংখ্যা বেশি।

NDA-র জন্য পরোক্ষ সুবিধা:

ঐতিহ্যগতভাবে, সরকার-বিরোধী (Anti-Incumbency) ভোটগুলি প্রধান বিরোধী জোট মহাজোটের দিকে যাওয়ার কথা। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের 'জন সুরাজ' সেই ভোটব্যাঙ্কের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে নিজেদের দিকে টেনে নিচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, জন সুরাজ এককভাবে হয়তো খুব বেশি সংখ্যক আসন জিততে পারবে না, তবে প্রতিটি আসনেই তারা মহাজোটের নিশ্চিত ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে সক্ষম। এর ফলে সরকারবিরোধী ভোটগুলি বিভক্ত হচ্ছে এবং এই ভোট বিভাজনের কারণেই NDA জোট একাধিক আসনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে যেতে পারে, যা পরোক্ষভাবে NDA-কে সাহায্য করবে।


ফলাফলের মোড়

মোটকথা, এই নির্বাচনটি শুধু দুটি রাজনৈতিক জোটের মধ্যেকার লড়াই নয়। একদিকে রয়েছে নারী ভোটারদের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা, যাদের ভোটদানের হারই চূড়ান্ত রায় নির্ধারণ করবে। অন্যদিকে, রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের মাধ্যমে পরিচালিত তরুণ এবং অসন্তুষ্ট ভোটারদের পরিবর্তনকামী ভোট, যা মহাজোটের সম্ভাবনাকে খর্ব করে দিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে NDA-র দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে। বিহারের নতুন সরকারের ভবিষ্যৎ এখন এই দুই নির্ণায়ক ফ্যাক্টরের রায়ের ওপরই নির্ভর করছে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies