" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory বাংলায় মীনাক্ষী, উরুগুয়েতে নাতালিয়া: মানচিত্র আলাদা হলেও তারুণ্যের লড়াইয়ের ভাষা সেই 'বিপ্লব' //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

বাংলায় মীনাক্ষী, উরুগুয়েতে নাতালিয়া: মানচিত্র আলাদা হলেও তারুণ্যের লড়াইয়ের ভাষা সেই 'বিপ্লব'

 




আন্তর্জাতিক ডেস্ক ও কলকাতা: সাত সমুদ্র তেরো নদীর ব্যবধান। একদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সদ্য শেষ হওয়া 'বাংলা বাঁচাও যাত্রা', যার পুরোভাগে ছিলেন বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী। মাইলের পর মাইল হেঁটে তিনি যখন বাংলার বুকে শাসক ও শোষকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দেওয়াল গড়ে তুলছেন, ঠিক তখনই হাজার মাইল দূরে লাতিন আমেরিকার দেশ উরুগুয়েতে জ্বলে উঠলেন আরেক অগ্নিকন্যা। মানচিত্র আলাদা, ভাষা আলাদা, কিন্তু লাল পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে তারুণ্যের স্পর্ধা আর পুঁজিবাদবিরোধী লড়াইয়ের শপথ যেন হুবহু এক।

তিনি নাতালিয়া দিয়াজ। উরুগুয়ের কমিউনিস্ট যুব ইউনিয়ন বা UJC-এর সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সদ্য সমাপ্ত উরুগুয়ের কমিউনিস্ট পার্টির (PCU) ৩৩তম কংগ্রেসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি কেবল প্রথাগত ভাষণ দেননি, বরং দেশের রাজনীতিতে এক নতুন দিশা দেখালেন।

"মানসিক অবসাদ আর সফল হওয়ার চাপে পিষ্ট আমাদের প্রজন্ম"

মঞ্চে দাঁড়িয়ে নাতালিয়া যখন কথা বলছিলেন, তখন তার প্রতিটি শব্দে উঠে আসছিল বর্তমান প্রজন্মের যন্ত্রণার কথা। ঠিক যেমন বাংলার যুব আন্দোলন কর্মসংস্থান আর স্বচ্ছতার দাবি তোলে, নাতালিয়া তুলে ধরলেন উরুগুয়ের যুব সমাজের এক জ্বলন্ত সমস্যা—মানসিক স্বাস্থ্য ও অনিশ্চয়তা।

ক্লাব আতেনাসের জনাকীর্ণ সমাবেশে নাতালিয়া বলেন, "আমরা এমন এক সমাজ ব্যবস্থায় বাস করছি যা আমাদের স্বার্থপর হতে শেখায়। সারাক্ষণ আমাদের ওপর 'সফল' হওয়ার এক অসম্ভব চাপ বা প্রেশার তৈরি করে রাখা হয়। ফলে আমরা সবসময় নিজেদের অযোগ্য মনে করি। উদ্বেগ, হতাশা এবং মানসিক অবসাদ আজ আমাদের প্রজন্মের নীরব মহামারী।"



তিনি উপস্থিত জনতাকে মনে করিয়ে দেন, এই মানসিক যন্ত্রণা কোনো ব্যক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং এটি একটি অসুস্থ পুঁজিবাদী সমাজ কাঠামোর লক্ষণ।

সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম, সবচেয়ে কম বেতন

পুঁজিবাদী শোষণের স্বরূপ উন্মোচন করতে গিয়ে নাতালিয়া বলেন, "দেশের সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারগুলোতে তরুণরাই বাস করে। তারাই কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে কম বেতন পায় এবং তাদেরই টিকে থাকার জন্য একই সাথে পড়াশোনা ও হাড়ভাঙা খাটুনি করতে হয়।"

আবাসন সংকট বা নিজের একটি বাড়ি থাকার স্বপ্ন দেখা যে আজ বিলাসিতা, তা তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। তার কণ্ঠে যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল বিশ্বজুড়ে খেটে খাওয়া তরুণদের বঞ্চনার সুর।



হতাশা নয়, পথ একটাই— 'বিপ্লব'

বাংলার মীনাক্ষী যেমন মানুষকে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানান, উরুগুয়ের নাতালিয়াও শোনালেন সেই সাহসের গান। হতাশার মাঝে তিনি আত্মসমর্পণের বদলে ডাক দিলেন প্রতিরোধের। সদ্য সমাপ্ত ১৮তম যুব কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে তিনি স্লোগান তুললেন— "Elegimos Revolución" বা "আমরা বিপ্লবকেই বেছে নিয়েছি"



তার মতে, এই বিপ্লব কেবল স্লোগানে সীমাবদ্ধ নয়। এর অর্থ হলো:

  • স্কুল, কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে গিয়ে তরুণদের সংগঠিত করা।

  • পাড়ায় পাড়ায় সংস্কৃতি ও সংহতির মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

  • এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংহতি গড়ে তোলা।

বাম সরকারের প্রতি বার্তা ও আগামীর পথ

বর্তমানে উরুগুয়েতে ফ্রেন্ত আম্পলিও-এর নেতৃত্বে বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও নাতালিয়া স্পষ্ট করে দেন যে, কেবল সরকারে থাকাই শেষ কথা নয়। তিনি বলেন, "সরকার হলো পরিবর্তনের গতি বাড়ানোর একটি হাতিয়ার মাত্র। আসল শক্তি হলো সংগঠিত জনগণ।"

বাংলার ধুলোমাখা রাজপথে মীনাক্ষী মুখার্জীর সেই তেজী ভঙ্গি আর উরুগুয়ের মঞ্চে নাতালিয়া দিয়াজের এই দৃপ্ত ঘোষণা—দুটি ছবি আজ এক সুতোয় গাঁথা। দেশকাল ভিন্ন হলেও, শোষণের বিরুদ্ধে তারুণ্যের উত্তর একটাই— লড়াই, সংগঠন এবং বিপ্লব।


Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies