তোরানোমন মোড়ের সেই মুহূর্ত
সকালটা ছিল মেঘলা। রাজপ্রতিনিধি যুবরাজ হিরোহিতো তার ঘোড়ার গাড়িতে করে ডায়েট বা সংসদ ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। ঠিক তোরানোমন চৌরাস্তায় ভিড়ের মধ্য থেকে দাইসুকে নানবা নামের এক যুবক তার পকেট থেকে লুকানো বন্দুক বের করে সরাসরি গাড়ির জানালা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।
তাৎক্ষণিক ফলাফল:
যুবরাজ হিরোহিতো অক্ষত থাকলেও গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আহত হন।
জাপানের ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কিত দিন হিসেবে চিহ্নিত।
দাইসুকে নানবা: কে এই বিদ্রোহী?
২৪ বছর বয়সী নানবা ছিলেন একজন ডায়েট সদস্যের ছেলে। তবে আভিজাত্য ছেড়ে তিনি কমিউনিস্ট আদর্শে দীক্ষিত হয়েছিলেন। হামলার পর বিচারে তাকে ‘উন্মাদ’ হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি অত্যন্ত শান্তভাবে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন।
উদ্দেশ্য ১: প্রতিশোধ
১৯১১ সালে কোতোকু শুসুই-এর ফাঁসির বদলা নেওয়া।
উদ্দেশ্য ২: প্রতিবাদ
কান্তো ভূমিকম্পের সময় বামপন্থী নেতাদের পুলিশি হত্যার প্রতিবাদ।
পরিবর্তিত জাপান: গণতন্ত্রের পতন
মন্ত্রিসভার পদত্যাগ
নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে প্রধানমন্ত্রী ইয়ামামোটোর পুরো মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
দমনমূলক আইন
১৯২৫ সালে পাস হয় ‘শান্তি সংরক্ষণ আইন’, যা দিয়ে বামপন্থী ও বিরোধী মতাদর্শীদের মুখ বন্ধ করা হয়।
শেষ চিৎকার
ফাঁসির মঞ্চে নানবার শেষ শব্দ ছিল— “জাপানি কমিউনিস্ট পার্টি জিন্দাবাদ!”
"তোরানোমন ঘটনা কেবল একটি ব্যক্তিগত আক্রমণ ছিল না, এটি ছিল জাপানের উদীয়মান গণতন্ত্রের ওপর এক বিশাল আঘাত যা দেশটিকে ধীরে ধীরে সামরিকতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেয়।"


