VIEWS NOW
The Pulse of Bengal
HIND SILIGURI AND OTHER
হাঁসখালি রায়: তৃণমূল নেতার ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড; বিচারের মুখে মমতার সেই বিতর্কিত 'লাভ অ্যাফেয়ার' মন্তব্য
তিন বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর হাঁসখালি গণধর্ষণ ও মৃত্যু মামলায় ৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল রানাঘাট আদালত। মূল অভিযুক্ত সোহেল গয়ালি সহ ৩ জনের কঠোর যাবজ্জীবন।
তৃণমূল নেতৃত্বের সরাসরি যোগ ও প্রভাবশালী তত্ত্ব:
২০২২ সালের ৪ এপ্রিল হাঁসখালির সেই জন্মদিনের পার্টিতে যা ঘটেছিল, তা ছিল এক ভয়াবহ ক্ষমতার অপব্যবহার। মূল অভিযুক্ত ব্রজোগোপাল ওরফে সোহেল গয়ালি হলেন স্থানীয় দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দ্র গয়ালির ছেলে। সিবিআই তদন্তে উঠে আসে যে, ঘটনার পর সমরেন্দ্র গয়ালি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কিশোরীর দেহ পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেছিলেন। আদালত সমরেন্দ্র গয়ালিকে অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়া এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ও জনরোষ:
"ওটাকে কি রেপ বলবেন? ও কি অন্তঃসত্ত্বা ছিল? নাকি ওর কোনো লাভ অ্যাফেয়ার ছিল? আমি তো শুনেছি ছেলেটির সাথে ওর একটা সম্পর্ক ছিল।"
— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (১১ এপ্রিল, ২০২২)
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য সেই সময় রাজ্যজুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। বিরোধী দলগুলি একে 'ভিকটিম ব্লেমিং' বা নির্যাতিতাকেই দোষী সাব্যস্ত করার প্রচেষ্টা বলে অভিযোগ করেছিল। আদালত আজ যে রায় দিয়েছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে যে এটি কোনও নিছক 'লাভ অ্যাফেয়ার' বা প্রেমের সম্পর্ক ছিল না, বরং ছিল পৈশাচিক গণধর্ষণ। বিচারের এই রায় মমতার সেই বিতর্কিত মন্তব্যকে আবারও রাজনৈতিক কাঠগড়ায় তুলে দিল।
সিবিআই তাদের চার্জশিটে জানিয়েছিল যে, স্থানীয় নদিয়া পুলিশ ঘটনার তদন্তে চরম গাফিলতি করেছিল। এমনকি কিশোরীর পরিবারকে বন্দুকের নলে রেখে শ্মশানে দেহ পোড়াতে বাধ্য করা হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট যখন মামলার ভার সিবিআইকে দেয়, তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতৃত্বের ছায়া এই মামলার প্রতিটি পদক্ষেপে ছিল।


