আরাবল্লী বাঁচাও
আরাবল্লীর মৃত্যুঘণ্টা:
খনি মাফিয়াদের স্বার্থে ধ্বংসের মুখে
সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়ে ভারতের 'সবুজ প্রাচীর' আজ বিপন্ন। আরাবল্লী পর্বতমালার ৯০% এলাকাই হারাতে বসেছে তার আইনি সুরক্ষা। এই রিপোর্টটি বিশ্লেষণ করে দেখায় কিভাবে একটি সংজ্ঞা পরিবর্তন উত্তর ভারতকে মরুভূমিতে পরিণত করতে পারে।
সংকটের মূল কারণ: ১০০ মিটারের সংজ্ঞা
ভৌগোলিক সত্য বনাম আইনি মারপ্যাঁচ
পূর্বের মানদণ্ড
১৯৯৬ সালের গোদাবর্মণ রায় এবং এফএসআই (FSI) এর নিয়ম অনুযায়ী, ২০ মিটার উচ্চতা এবং ৩ ডিগ্রি ঢাল থাকলেই তা পাহাড় হিসেবে গণ্য হতো। এটি প্রকৃতির স্বাভাবিক সংজ্ঞাকে সম্মান জানাতো।
নতুন নিয়ম (নভেম্বর ২০২৫)
CEC-র সুপারিশ মেনে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আশপাশের সমতল থেকে উচ্চতা ১০০ মিটারের কম হলে তা আর 'আরাবল্লী পাহাড়' নয়। এর ফলে নিচু পাহাড়, রিজ এবং মালভূমি সুরক্ষার বাইরে চলে গেল।
পরিসংখ্যান ও প্রভাব
নিচের চার্টগুলোর মাধ্যমে দেখুন আরাবল্লীর কত বিশাল অংশ আমরা হারাতে চলেছি এবং এর ফলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তরে কী বিপর্যয় নেমে এসেছে।
Rajasthan Hills: Protected vs Unprotected
Groundwater Levels: Alwar & Nuh
আসন্ন মহাবিপর্যয়
খনি শিল্পের আগ্রাসনের ফলে তিনটি প্রধান পরিবেশগত বিপর্যয় উত্তর ভারতকে গ্রাস করবে। বিস্তারিত জানতে কার্ডগুলোতে ক্লিক করুন।
মরুকরণ ও ধূলিঝড়
আরাবল্লী থর মরুভূমির ঢাল হিসেবে কাজ করে। এই ঢাল সরে গেলে বালি পূর্বদিকে এগোবে।
তীব্র জলসংকট
পাহাড়গুলো বৃষ্টির জল ধরে রেখে ভূগর্ভস্থ জলস্তর রিচার্জ করে।
বিষাক্ত বাতাস
দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের 'সবুজ ফুসফুস' এই পর্বতমালা।
কেন এই সিদ্ধান্ত? অর্থনীতি বনাম বাস্তুতন্ত্র
অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি (লোভ)
- ➤ নির্মাণ সামগ্রী: দিল্লি-এনসিআর-এর রিয়েল এস্টেট বুমের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর ও নুড়ির জোগান।
- ➤ খনিজ সম্পদ: দস্তা, সিসা এবং মার্বেলের বিশাল ভাণ্ডার ('কপার সিটি')।
- ➤ অবৈধ বাণিজ্য: ২০২৩ সালে নুহ্ অঞ্চল থেকে ৮ কোটি মেট্রিক টন খনিজ অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।
বাস্তুতান্ত্রিক মূল্য (ক্ষতি)
- ➤ অপূরণীয় ক্ষতি: কোটি বছরের পুরনো বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
- ➤ ভবিষ্যৎ অন্ধকার: খনিকাজের জন্য সাময়িক লাভের বিনিময়ে আগামী প্রজন্মের জন্য মরুভূমি তৈরি করা হচ্ছে।
- ➤ বৈধতার আড়ালে লুণ্ঠন: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনি পরিবর্তন আসলে অবৈধ খনি কারবারকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা।
উপসংহার
"এই সিদ্ধান্ত 'সংরক্ষণের' বদলে 'লুণ্ঠনের' পথ প্রশস্ত করেছে। অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা না করা হলে, মানুষের তৈরি এক বিশাল পরিবেশগত বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।"


