তেগুসিগালপা, হন্ডুরাস:২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চরম নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর প্রাথমিক ফলাফলে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যাচ্ছে। ব্যবধান অত্যন্ত কম হওয়ায় দেশটির নির্বাচন কমিশন পরিস্থিতিকে ‘টেকনিক্যাল টাই’ বা অমীমাংসিত হিসেবে অভিহিত করেছে এবং ম্যানুয়াল বা হাতে-কলমে ভোট পুর্নগণনার নির্দেশ দিয়েছে।
ফলাফলের সর্বশেষ অবস্থা এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী: নাসরি আসফুরা (ডানপন্থী ন্যাশনাল পার্টি): যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনপুষ্ট এই প্রার্থী প্রায় ৪১% ভোট পেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
সালভাদর নাসরাল্লা (মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টি):তিনি নাসরি আসফুরার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন এবং প্রায় ৩৯% ভোট পেয়েছেন। রিক্সি মনকাডা (বামপন্থী লিবরে পার্টি) ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী প্রায় ২০% ভোট পেয়ে দৌড়ে পিছিয়ে আছেন।
নির্বাচনী জটিলতা ও কারচুপির অভিযোগ ভোটের ব্যবধান নগণ্য হওয়ায় হন্ডুরাসের জাতীয় নির্বাচনী কাউন্সিলের প্রধান ম্যানুয়াল রিকাউন্ট বা পুনরায় ভোট গণনার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থীই একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে থাকা রিক্সি মনকাডাও ফলাফলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ট্রাম্পের প্রভাব ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এবং বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প প্রকাশ্যে ডানপন্থী প্রার্থী নাসরি আসফুরাকে সমর্থন দিয়েছেন, মূলত মাদক পাচার ও অপরাধ দমনের প্রতিশ্রুতিকে কেন্দ্র করে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সমর্থন আসফুরার ভোট ব্যাংকে প্রভাব ফেলেছে।
ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নির্বাচনে যিনিই জয়ী হবেন, তিনি ২০২৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। একক রাউন্ডের এই নির্বাচনে জয়ের জন্য সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ট। তবে নতুন সরকারের সামনে উচ্চ অপরাধ হার, বেকারত্ব, মাদক সমস্যা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার মতো বড় চ্যালেঞ্জগুলো অপেক্ষা করছে। আপাতত পুরো বিশ্বের নজর এখন হন্ডুরাসের নির্বাচন কমিশনের দিকে, কারণ এই পুর্নগণনাই নির্ধারণ করবে দেশটির পরবর্তী নেতৃত্ব।




