" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ দিবস: ভোপালের সেই অভিশপ্ত রাতের স্মৃতিতে আজও স্তব্ধ ভারত, বাতাসে ভাসছে সচেতনতার বার্তা //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ দিবস: ভোপালের সেই অভিশপ্ত রাতের স্মৃতিতে আজও স্তব্ধ ভারত, বাতাসে ভাসছে সচেতনতার বার্তা




নয়া দিল্লি/ভোপাল, ২ ডিসেম্বর: ক্যালেন্ডারের পাতায় আজ ২ ডিসেম্বর। ভারতের ইতিহাসের এক কালো দিন। ১৯৮৪ সালের সেই হাড়হিম করা শীতের রাত, যখন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল বিষাক্ত গ্যাসে। আজ ‘জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ দিবস’। তবে এই দিনটি কেবল নিয়মমাফিক পালনের দিন নয়, বরং হাজারো হারিয়ে যাওয়া প্রাণের প্রতি অশ্রুসজল শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানোর দিন।



সেই কালরাত্রি: যখন বাতাস হয়ে উঠেছিল বিষ


১৯৮৪ সালের ২-৩ ডিসেম্বরের সেই মধ্যরাত। ভোপালবাসী তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ঠিক তখনই ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের (UCIL) কীটনাশক কারখানার ৬১০ নম্বর ট্যাঙ্ক থেকে নিঃশব্দে লিক হতে শুরু করে মারণ গ্যাস—মিথাইল আইসোসায়ানেট (MIC)। পাইপ পরিষ্কার করার সময় অসাবধানতাবশত জল ঢুকে পড়েছিল ট্যাঙ্কে, আর তাতেই ঘটে যায় ভয়াবহ রাসায়নিক বিক্রিয়া। যে সব সুরক্ষা ব্যবস্থা মানুষকে বাঁচানোর কথা ছিল—সেই রেফ্রিজারেশন ইউনিট বা গ্যাস স্ক্রাবার—সেদিন সবই ছিল অকেজো। মানুষের অবহেলা আর যন্ত্রের ব্যর্থতা মিলেমিশে তৈরি করেছিল এক মৃত্যুফাঁদ।


গণমৃত্যুর মিছিল ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত


মুহূর্তের মধ্যে ভোপাল শহর পরিণত হয়েছিল এক গ্যাস চেম্বারে। শ্বাস নিতে গিয়ে মানুষ অনুভব করেছিল যেন আগুন গিলছে। চোখ জ্বলে যাচ্ছিল, দম আটকে আসছিল। বাঁচার আশায় ছুটছিল মানুষ, কিন্তু সেই বিষাক্ত বাতাস থেকে পালানোর পথ ছিল না। সরকারি নথিতে তাৎক্ষণিক মৃত্যুর সংখ্যা ৩,৭৮৭ বলা হলেও, বেসরকারি মতে সেই কয়েক সপ্তাহে প্রায় ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ মানুষের প্রাণপ্রদীপ নিভে গিয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা ১৫,০০০ ছাড়িয়ে যায়।

কিন্তু মৃত্যুতেই শেষ হয়নি সেই বিভীষিকা। প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ সেই বিষাক্ত গ্যাসের শিকার হন। আজ চার দশক পরেও সেই রাতের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন অগণিত মানুষ। বেঁচে থাকাদের শরীরে বাসা বেঁধেছে দুরারোগ্য ব্যাধি—ফুসফুসের সমস্যা, অন্ধত্ব, ক্যানসার এবং স্নায়ুর রোগ। সবচেয়ে মর্মান্তিক সত্য হলো, সেই বিষের প্রভাব আজও অমলিন—পরবর্তী প্রজন্মের শিশুরাও জন্মাচ্ছে সেই রাসায়নিকের ক্ষত আর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে।



আজকের শপথ: আর কোনো ভোপাল নয়


জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ দিবস আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়, উন্নয়নের নামে প্রকৃতির ওপর অত্যাচার আর সুরক্ষায় অবহেলা কতটা ভয়াবহ হতে পারে। আজকের দিনটির উদ্দেশ্য কেবল মৃতদের স্মরণ করা নয়, বরং দূষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। বায়ু, জল ও মাটি দূষণ আজ এক নীরব ঘাতক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই দিবসে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র ও সাধারণ মানুষের একটাই শপথ—শিল্পক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণ করা। ভোপালের সেই সব নাম না জানা শহিদদের প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা হবে, যদি আমরা এক দূষণমুক্ত ও নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি। যাতে আর কোনো রাত এমন অভিশাপ নিয়ে না আসে, আর কোনো শহরকে এভাবে বিষে নীল হয়ে ধুঁকতে না হয়।


Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies